Thursday, December 10, 2015

Money laundering

সূত্র: গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি
Global Financial Integrity (GFI)....বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে আরও ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পাচার হওয়া এই অর্থ আগের বছরের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) গতকাল বুধবার অর্থ পাচারের এই তথ্য প্রকাশ করেছে। জিএফআই সাত বছর ধরে উন্নয়নশীল দেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে পাচার হয়, তা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। এবার ‘উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে অবৈধ অর্থের প্রবাহ ২০০৪-১৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত আমদানি-রপ্তানির সময়ে পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করার মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ওই অর্থ বাংলাদেশের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, পল্লী উন্নয়ন, শিল্প ও ভৌত অবকাঠামো খাতের মোট উন্নয়ন বাজেটের সমান।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম অর্থ পাচার রোধে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সমন্বিতভাবে অনুসন্ধানের পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দু–তিন বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি স্থবির। অর্থ পাচারের বড় কারণ হয়ে থাকতে পারে এটা।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়টি নিয়ে এনবিআর আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি বিশেষ সেল খোলা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এনবিআর নিবিড়ভাবে কাজ করছে। প্রতিনিয়তই এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ তিনটি কার্যক্রম একসঙ্গে চলমান থাকলে অর্থ পাচার রোধ চূড়ান্ত রূপ লাভ করবে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ২০১২ সালের রিপোর্টটি প্রকাশ করেছিল জিএফআই। সে সময়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, আগামী দিনেও অর্থ পাচার অব্যাহত থাকবে। কোনো আইন করে এটা ঠেকানো যাবে না। কেননা, টাকা পাচারের বিষয়টি অনেকাংশে সুশাসনের সঙ্গে জড়িত।
আহসান মনসুরের আশঙ্কা সত্যি বলেই প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ পাচার হলেও ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। এতে বেশি অর্থ পাচার হওয়া দেশের তালিকায় খারাপ অবস্থানে গেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ ছিল ১৪৫টি দেশের মধ্যে ৫১তম। আর এবার বাংলাদেশ ১৪৯টি দেশের মধ্যে হয়েছে ২৬তম।
বর্তমানে দেশের বাইরে থাকা আহসান মনসুর এক বছর আগে আরও বলেছিলেন, যাঁরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থসম্পদ গড়েন, তাঁরা টাকা পাচার করেন। এর পাশাপাশি দেশের শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের একটি অংশ নিজেদের পরিবার এবং সন্তানদের নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তার জন্য বিভিন্নভাবে অর্থ বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। তারা মনে করছে, যেভাবে ব্যবসা, কারখানা ও সম্পদ এ দেশে তারা গড়ে তুলেছে, তাদের সন্তানেরা তা পারবে না।
জিএফআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে ২০০৪ সাল থেকে অর্থ পাচারের হিসাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে ২০১২ ও ২০১৩ সালে। যেমন ২০১২ সালে অর্থ পাচারের পরিমাণ ৭২২ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০০৪ সালে পাচার হয়েছিল ৩৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০০৫ সালে ৪২৬ কোটি ২০ লাখ ডলার, ২০০৬ সালে ৩৩৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ২০০৭ সালে ৪০৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ২০০৮ সালে ৬৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২০০৯ সালে ৬১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০১০ সালে ৫৪০ কোটি ৯০ লাখ ডলার এবং ২০১১ সালে পাচার হয় ৫৯২ কোটি ১০ লাখ ডলার।
সব মিলিয়ে ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ৫ হাজার ৫৮৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। এই অর্থ দিয়ে অন্তত দুই বছরের বাজেট তৈরি করতে পারত বাংলাদেশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গড়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
জিএফআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভ কার ও অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্পানজারস বরাবরের মতো এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। ডেভ কার এর আগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তাঁরা বিভিন্ন দেশের লেনদেনের ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেছেন। আর এসব পরিসংখ্যানের উৎস হচ্ছে আইএমএফ। এবারের প্রতিবেদনে ২০০৩ সালের তথ্য দেওয়া ছাড়াও আগের বছরগুলোর পরিসংখ্যান হালনাগাদ করা হয়েছে। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ফিনল্যান্ড সরকার।
গবেষণায় মূলত দুভাবে অর্থ পাচারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ট্রেড মিসইনভয়েসিং বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চালানের গরমিলের মাধ্যমেই বেশি পরিমাণ অর্থ উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ পণ্য আমদানি-রপ্তানির চালানে প্রকৃত মূল্য আড়াল করে কমবেশি দেখিয়ে একদিকে কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে মোটা অঙ্কের অর্থ দেশে না এনে বাইরেই রেখে দেওয়া হয়েছে। অপরটি হলো আন্তর্জাতিক লেনদেনে গরমিল, তবে এর মধ্যে ভুয়া চালান দেখিয়েই অর্থের ৮৩ শতাংশ পাচার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকেও দুভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয় আমদানি-রপ্তানিতে পণ্যের প্রকৃত মূল্য আড়াল করার মাধ্যমে। যেমন গত ১০ বছরে এভাবে পাচার করা অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৯১৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর মধ্যে ২০১৩ সালে পাচার হয় ৮৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অন্যান্য বছরের মধ্যে ২০০৪ সালে পাচার হয় ৩৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার, ২০০৫ সালে ৩৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ২০০৬ সালে ২৭৩ কোটি, ২০০৭ সালে ৩৩৪ কোটি ২০ লাখ ডলার, ২০০৮ সালে ৬১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার, ২০০৯ সালে ৫৪৩ কোটি ডলার, ২০১০ সালে ৫০০ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ২০১১ সালে ৪৭৫ কোটি ডলার এবং ২০১২ সালে পাচার হয়েছে ৬৫৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এই হিসাব অনুযায়ী, ১০ বছরে গড়ে প্রতিবছর আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পাচার হয়েছে ৪৯৩ কোটি ১০ লাখ ডলার।
অর্থ পাচারের এই ধরন নিয়ে এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম সবশেষে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের কথা সবাই জানেন, আমার তো মনে হচ্ছে, রপ্তানির আড়ালেও অর্থ পাচার হতে পারে।’ গত মাসে দেশের যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার পেছনেও অর্থ পাচার থাকতে পারে বলে সন্দেহ পোষণ করেছেন তিনি।

Tuesday, November 17, 2015

"Sin"

What is Sin?

Sin is the argument over wrong work. May we interested to do sin? We do the bad work and that is harmful for people. People suffer for our worst work.

.....................
Please write your opinion